একটি কঠিন পদার্থ টেবিলে রাখা হলে কঠিন পদার্থটি টেবিলের যে অংশটুকু স্পর্শ করবে সেখানে এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করবে। কঠিন পদার্থ না রেখে আমরা যদি একইভাবে টেবিলে তরল পদার্থ রাখতে চাই সেটি কাজ করবে না, তরলটি সারা টেবিলে গড়িয়ে যাবে। তরলটি রাখতে হবে কোনো একটা পাত্রে এবং তরলটি শুধু নিচে নয় চারদিকে পাত্রটির গায়ে চাপ দেবে। (পাত্রটির গায়ে একটা ফুটো করা হলে তরলের চাপে এই ফুটো দিয়ে তরল বের হতে থাকবে) আমরা যদি গ্যাস রাখতে চাই তাহলে সেটি আর পাত্রে রাখা সম্ভব না, তখন সেটি একটা আবদ্ধ জায়গায় রাখতে হবে এবং গ্যাস এই আবদ্ধ জায়গার চারদিকে চাপ প্রয়োগ করবে। একটা বেলুন ফুলিয়ে সেখানে গ্যাস রাখা হয় এবং বেলুনটা না ফাটিয়ে সেখানে একটা ফুটো করতে পারলে বাতাসের চাপে এই ফুটো দিয়ে বাতাস বের হতে থাকবে।
আমরা গ্যাসের চাপের কথা উল্লেখ করেছি কিন্তু এর কারণটি ব্যাখ্যা করিনি। পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্ব দিয়ে আমরা চাপের কারণটি ব্যাখ্যা করতে পারব। আবদ্ধ জারগার গ্যাস রাখা হলে এটি পাত্রের গায়ে একধরনের চাপ দের, পদার্থের আণবিক গতিতত্ত্ব দিয়ে সেটি ব্যাখ্যা করা যায়। আবদ্ধ জায়গার ভেতর গ্যাসের অণুগুলো ছোটাছুটি করতে থাকে এবং প্রতিনিয়ত সেটি আবদ্ধ জায়গার দেয়ালে এসে আঘাত করে এবং প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যায়। অর্থাৎ গ্যাসের অণু একটি ভরবেগে দেয়ালে আঘাত করে অন্য ভরবেগে ফিরে যায়। তোমরা জানো ভরবেগের পরিবর্তন করতে হলে বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করতে হয়। গ্যাসের অণু দেয়ালে আঘাত করে বল প্রয়োগ করে, নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী পাত্রের দেয়াল একটি পাল্টা বল গ্যাসের অণুর উপর প্রয়োগ করে অণুটিকে প্রতিফলিত করে দেয়।
এভাবে অসংখ্য অণু আবদ্ধ পাত্রের দেয়ালে আঘাত করে বল প্রয়োগ করতে থাকে এবং এই সম্মিলিত ফলটিই গ্যাসের চাপ হিসেবে দেখা যায়। যদি গ্যাসের তাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে অনুগুলোর গতিশক্তি বেড়ে যাবে এবং সেটি আরো জোরে দেয়ালে আঘাত করতে পারবে। অর্থাৎ চাপ বেড়ে যাবে। আমরা পরের অধ্যায়ে তাপ দিয়ে তাপমাত্রা বাড়ানোর সাথে চাপ বেড়ে যাওয়ার সম্পর্কটি নতুনভাবে দেখৰ।
আরও দেখুন...